***লোকাল বাস***
বাসা থেকে আমাদের কলেজ প্রায় ১-১.৫ কিলোমিটারের পথ। বাসার পাশে থেকে বাস
যায় কলেজের রোডে। তাই প্রতিদিন কলেজে যায় লোকাল বাসে করে।
লোকাল বাসে যাওয়ার সময় প্রতিদিন পোহাতে হয় বিভিন্ন ঝামেলা। কড়া রোদের
মধ্যে দাঁড়িয়ে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করতে হয় (যেখান থেকে গাড়িতে উঠি সেখানে
ছাঁয়ায় দাঁড়াবার মতো কোনো স্থান নেই) । খোলা আকাশের নিচে সূর্য থেকে গরম
রোদ সরাসরি এসে পড়ে আমার গায়ে।
গাড়ি পেতেও অনেক সময় দেরী হয়ে যায়, বিশেষ করে যেদিন পরীক্ষা থাকে বা
যেদিন কোনো একটি জরুরী কাজে তাড়াহুড়া করে কোথাও পৌঁছাতে হয় সেদিন। এটা
অবশ্য আমার মত যাঁরা লোকাল বাসের যাত্রী তাদের কাছে নতুন কিছু নয়।
গাড়ি একটা পেলে ওটাতে উঠতে হয় লাফ দিয়ে। অধিকাংশ সময় ড্রাইভাররা গাড়ি
সম্পূর্ণ ব্রেক করেন না (যদি মহিলা না উঠেন) । অনেক সময় একটু বেশি আবার
অনেক সময় ধীর গতিতে গাড়ি চলতে থাকে। যখন লোকাল বাসের নতুন যাত্রী ছিলাম
অর্থাৎ, যখন নতুন শহরে আসি তখন ২/১ বার গাড়িতে লাফ দিয়ে উঠার সময় পায়ে
ব্যথা পেয়েছিলাম। নামার সময়ও নামায় একি ভাবে। বাম পা দিয়ে সামনে দৌড়ে
নামতে হয়। কারণ, গাড়ি চলন্ত অবস্থায়।
যেদিন গাড়িতে যাত্রী কম থাকে সেদিন মাঝ পথে গাড়ি থামিয়ে রাখবে যাত্রী
খোঁজার আশায়। যতক্ষণ পর্যন্ত না গাড়িতে মানুষ উপচে পড়ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত
নিতে থাকবে। অনেক্ষণ ধরে গাড়ি দাঁড়িয়ে রাখার কারণে অনেক যাত্রী
ড্রাইভারকে বকাঝকা করে। কিন্তু, তা শুনতে শুনতে তিনি অভ্যস্ত হয়ে গেছেন
বা এগুলো তার কানের বাইরে।
গাড়িতে কিছু মানুষের কিছু আচরণ দেখে অবাক হই! সিটে বসার জন্য মানুষ এতো
পাগল! লোকাল বাসের সিটটা যেন একটা সোনার খনি! একটা মানুষ সিট থেকে উঠার
আগে আরেকটা মানুষ কীভাবে যে ঐ সিটটা দখল করে নিবে সে কথা ভেবে পায়না!
এরকম ঘটনা আমার সাথে বা আমার সামনে প্রায়ই ঘটে। কয়েকদিন আগেও আমার সাথে
ঘটল এরকম একটা ঘটনা।
আসছিলাম জিইসি (চট্টগ্রামের একটা যায়গা) থেকে। সাথে ছিল আমার এক ফ্রেন্ড।
গাড়িতে সিট পায়নি। অনেক ঠেসাঠেসির মধ্যে দু'জনেই দাঁড়ালাম পাশাপাশি (কালো
প্যান্ট পরলে তো হাটুর নিচের অবস্থা করুণ) । একটু পর আমার পাশের সিটের
মানুষটা নেমে যাচ্ছিলেন। উনার পাশে যেহেতু আমি দাঁড়ানো ছিলাম সিটটা আমারই
পাওয়ার কথা। মানুষটা উঠার পর আমি আমার ফ্রেন্ডকে বলছি ঐ সিটে বসার জন্য।
এই কথা বলতেই আরেকটা মানুষ আমার হাতটা ঠেলে বসে পড়লেন ঐ সিটে! আমি যে
আমার ফ্রেন্ডকে ঐ সিটে বসতে বলছি সেটা তিনি দেখেছিলেন। দেখার পরেও তিনি
এমনটা করলেন। যেহেতু এধরনের ঘটনা গুলো আমার কাছে নতুন নয় তাই আমি আমার
ফ্রেন্ডের দিকে তাকিয়ে হাসছি। 3:)
উনার পাশের সিটে যে মানুষটি ছিলেন তিনি উঠে যাওয়ার পরে আমি উনার পাশেই
বসেছিলাম। মানুষটি আমাদের চট্টগ্রামের ছিলেন না। উনি ফোনে কথা বলছিলেন
এবং তার কথা শুনেই সেটা বুঝতে পেরি।
No comments:
Post a Comment